ঈদের ছুটিতে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬০ রোগীর মৃত্যু
ঈদের ছুটিতে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬০ রোগীর মৃত্যু

ঈদুল আজহার চার দিনের সরকারি ছুটিতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে স্বাভাবিক বললেও রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, চার দিন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের ওপর ভরসা করে চলতে হয়েছে। সিনিয়র চিকিৎসক কেউ সেবা দিতে আসেননি।

হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারি ছুটির প্রথম দিন ২৭ জুন হাসপাতালে ১ হাজার ১৬৭ জন রোগী ভর্তি হন। ওই দিন নতুন ১৩ জনসহ মোট ৩০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর মধ্যে একজন ডেঙ্গু আক্রান্তসহ মোট ১৫ জন বিভিন্ন ওয়ার্ডে মারা যান।

সরকারি ছুটির দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ঈদুল আজহার আগের দিন ২৮ জুন ১ হাজার ২০৫ জন রোগী ভর্তি হন। এর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত নতুন ৯ জন রোগী ছিলেন। ওই দিন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সর্বাধিক ২০ জনের মৃত্যু হয়। আর ঈদের দিন ২৯ জুন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ১ হাজার ৬৫ জন রোগী। এর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত নতুন রোগী ছিলেন ২৬ জন। ওই দিন ডেঙ্গু আক্রান্ত একজনসহ ১৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়। এছাড়া ঈদের দ্বিতীয় দিন ৩০ জুন চিকিৎসাধীন ছিলেন ১ হাজার ১৬৭ জন। ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে নতুন ১০ জন ভর্তি হন। ওই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১২ জন মারা যান।

মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঈদের সময় আমাদের হাসপাতালেই থাকতে হয়েছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে এই চার দিনে কোনো চিকিৎসক আসেননি। মাঝেমধ্যে দুয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক এসে ঘুরে যেতেন আর অল্প কয়েকজন নার্স ছিলেন। সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম, হাসপাতালে এসেও আমার বাবাকে যেন বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে না হয়।

গাইনি ওয়ার্ডের আরেক রোগীর স্বজন মহিমা বেগম বলেন, ঈদের ছুটির সময়ে বড় কোনো ডাক্তার তো আসেননি তার উপর নার্সদের সঙ্গে কথা বলাও যেত না। কিছু বলতে গেলেই ধমক দিতেন। বলতেন, ঈদের সময়ে ডিউটি করি এটাই বড় কথা। এছাড়া রোগীর অবস্থা সিরিয়াস না হলে কেউ যেন তাদের অহেতুক বিরক্ত না করি সেজন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নির্দেশ দিয়েছেন। তখন এক রোগীর স্বজন প্রশ্ন তোলেন, হাসপাতালে কি সুস্থ রোগী ভর্তি হন?’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ঈদের বন্ধের সময় যে সংখ্যক রোগীর মৃত্যু হয়েছে তা হাসপাতালের স্বাভাবিক ঘটনা। ডাক্তার-নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রোস্টার অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন। চিকিৎসায় অবহেলার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আরও জানতে এখানে পড়ুন


Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *