প্রতীকি ছবি

বরিশাল নগরীতে ‘পূর্ব শত্রুতার জের’ ধরে এক ছাত্রলীগ কর্মীর একটি হাত কনুইয়ের উপর থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে একদল হামলাকারী।
সোমবার মধ্যরাতে বরিশাল জিলা স্কুলের পেছনের ফটকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন।
হাত বিচ্ছিন্ন হওয়া যুবকের নাম রেদোয়ান আহম্মেদ আকন রাধো (২৬)। তিনি নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকার জয়নাল আবেদীন আকনের ছেলে।
রেদোয়ান মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। হামলার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ভাটিখানা সুন্নিয়া মসজিদ এলাকার তানভীর হাওলাদার নবীনকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাত বিচ্ছিন্নের কাজে ব্যবহৃত ধারালো রামদাটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
“এ ঘটনায় রেদেয়ানের বাবা মামলা করেছেন। এতে কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা মামুনকে একমাত্র নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে অসীম দেওয়ান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রেদোয়ান তার অনুসারী। হামলাকারীরা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক রইস আহমেদ মান্নার অনুসারী বলে তিনি শুনেছেন। বিষয়টি আরো যাচাই করে দেখছেন বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে রেদোয়ানের বাবা জয়নাল আবেদীনের দাবি, তার ছেলে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও কারো অনুসারী ছিলেন না।
তিনি বলেন, “সোমবার রাত ৯টার দিকে রেদোয়ানকে ফোন করে কেউ বাসা থেকে ডেকে নেয়। রাত ১২টার দিকে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে তারা ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন।”
হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন জানিয়ে জয়নাল আবেদীন বলেন, “নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ায় কাটা হাত আর জোড়া লাগানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এখন তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
এখনও রেদোয়ানের হাত থেকে রক্তপাত হচ্ছে জানিয়ে তার বাবা বলেন, ছেলের অবস্থা বেশি ভালো না।
মামলায় মামুন নামে যাকে প্রধান আসামি করেছেন তার সঙ্গে রেদোয়ানের পূর্ব বিরোধ রয়েছে বলে জানান তার বাবা।
তিনি বলেন, “অচেতন হওয়ার আগে রেদোয়ান মামুনসহ কয়েকজনের নাম জানিয়েছে। সে বলেছে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মামুন ফোন করে তাকে জিলা স্কুলের পিছনে গেইটে যেতে বলে। রাত ১১টার দিকে সেখানে পৌঁছলে মামুনসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন তাকে মারধর করে। পরে অজ্ঞাতরা ছেলের বাম হাত টেনে ধরে ও মামুন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কনুইয়ের উপর থেকে বিচ্ছিন্ন করে।”
রেদোয়ানের খালাতো ভাই খলিল সিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৫/৬ বছর আগে একটি ঘটনায় মামুনকে মারধর করেছিল রেদোয়ান। সেসময় তাদের মধ্যে এক ধরনের শত্রুতা তৈরি হলেও পরে তা মিটে যায়। তারা এক সঙ্গেই চলাফেরা করত। তাই মামুনের ফোন পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল রেদোয়ান। সেখানে হাত কেটে ফেলার পাশাপাশি তাকে হত্যারও চেষ্টা করা হয়।”
কিন্তু রেদোয়ানের চিৎকারে স্থানীয়রা ও কাছে থাকা পুলিশ এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে জানান খলিল।
হামলাকারীদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় জানেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “রেদোয়ান সুস্থ হলে তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।”
Source link