ভালুকায় মল্লিকবাড়ি জিসি থেকে ভরাডোবা ঘাটাইল আরএইচডি উথুরা বাজার সড়কের খিরু নদীর ওপর নির্মিত ঘূর্ণিঘাট সেতু উদ্বোধনের আগেই এর সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধসে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সেতুর নির্মাণকাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদুল আহম্মেদসহ ময়মনসিংহ স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, ৬ কোটি ৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয় ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৮১ মিটার, প্রস্থ ৭.৩ মিটার এবং একশ মিটার করে এর দুই পাশের সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার। সেতুর ঠিকাদার মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার স্বত্বাধিকারী জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ি সাধারণ সম্পাদক ফারুখ আহম্মেদ চৌধুরী। সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ করার নির্দেশনা ছিল ২০২১ সালের ২৯ জুনের মাঝে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে না পারায় তিন দফায় কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে সেতুর উভয় পাশের সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ফাটলের আকার বড় হয়ে সেতু সংলগ্ন সড়কের একাধিক স্থানে দেবে গেছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সেতুর ব্যবহার ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংযোগ সড়ক দেবে যাওয়ায় মূল সেতুর নির্মাণকাজ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করার সময় ঠিকাদার ট্রাক দিয়ে মাটি, খোয়া ও বালু ফেলে ঠিকমতো রুলিং করেননি। নিম্নমানের কাজ করার সময় আশপাশের লোকজন প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদার সরকারদলীয় প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় বিষয়টি আমলে নেননি। পাঁচগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাইন উদ্দিন জানান, সংযোগ সড়কে ঠিকমতো রুলিং করা হয়নি। নির্মাণের ১৫ দিনের মাঝেই বিভিন্ন স্থানে দেবে গেছে। পানিবান্দা গ্রামের বাসিন্দা খাইরুল ইসলাম জানান, সেতুটি কয়েক গ্রামের স্বপ্ন ছিল, এটি নির্মাণ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে।
মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ফারুখ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, নকশা অনুসারে কাজ করা হয়েছে। নকশার ত্রুটির জন্য যদি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে তাহলে ওই দায়িত্ব এলজিইডির। ভালুকা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মাফুজুর রহমান বলেন, সেতুর কাজ বুঝে নেওয়া হয়নি। ঠিকাদারের কাজের চূড়ান্ত বিলের ৮০ লাখ টাকা বাকি রয়েছে। সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এলজিইডির সড়ক ও ব্রিজ নির্মাণ হয় জনগণের জমির ওপর দিয়ে। সড়কের সংযোগ সড়ক প্রস্থ করতে চাইলে জমির মালিকরা বাধা দেওয়ায় আমরা রাস্তার স্লপিং দিতে পারি না। যে কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়ক ধসে পড়েছে।
Source link