মুচলেকা বিতর্কে লাভক্ষতির হিসাব
হেফাজতের সর্বশেষ সাংগঠনিক ঘোষণা সরকার তথা শাসক দলের জন্য লাভজনক হয়েছে। যেকোনো দেশে যেকোনো শাসক দল তার প্রতিপক্ষ শক্তির সংখ্যা কমিয়ে আনতে চায়। এ রকম চাওয়া স্বাভাবিক। হেফাজতের মতো বিশাল একটি সংগঠন যদি শাসক দলকে কথা দেয় যে তারা রাজনীতি করবে না, তাহলে সেটা আওয়ামী লীগের জন্য স্বস্তির হওয়ার কথা। প্রশ্ন উঠতে পারে, এই প্রতিশ্রুতি বা অঙ্গীকার বা তার প্রচারণা বাস্তবসম্মত কি না? তবে এর ফলে হেফাজতের নেতৃত্বে নিশ্চিতভাবে রাজনৈতিক দলবহির্ভূত আলেমদের অবস্থান শক্তিশালী করে তুলবে।
মুচলেকা না হলেও হেফাজতের নতুন অবস্থান দেশের বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরেও বেশ আলোড়ন তুলেছে। তাদের জন্য এ সময় এ রকম সংবাদ সুখকর হয়নি। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাপারটি ভিন্ন রকমও হতে পারে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় হেফাজতের ১০ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমির এবং মহাসচিবও। ওনারা দলের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছেন। তবে এই ১০ জন যে সংগঠনের শক্তি-ভিত দেশের সব মাদ্রাসার প্রতিনিধিত্ব করেন, এমন নয়। হেফাজতের সাংগঠনিক পরিসর শত শত মাদ্রাসায় বিস্তৃত। কওমি প্রাক্তনদের কাছেও তার আবেদন আছে। সুতরাং এখনকার ১০ নেতার নির্দেশ বা সিদ্ধান্ত মতো হেফাজতের সব কর্মী যেমন বিরোধীদলীয় রাজনীতির সমর্থক হবেন না, তেমনি সরকার-সমর্থকও হবেন না কিংবা রাজনীতিবর্জিত ব্যক্তি হয়ে যাবেন না।
হেফাজত কোনো এক ব্যক্তি বা গুটিকয়েক ব্যক্তির প্রভাবে নেই এ সময়। শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর এই সংগঠনে একক নেতৃত্বের জায়গা বদলে গেছে। মাওলানা শফীর মৃত্যু নিয়ে হেফাজতেরই একাংশ অপর ৩৬ নেতার বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে হত্যা মামলা দিয়েছিল। নেতৃত্ব কাঠামোর সেসব ফাটল পুরোটা ভরাট হয়েছে এমন বলা বিতর্কসাপেক্ষ।
Source link