বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে এবং সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে নির্দেশনা দিতে আলেম-ওলামাদের (ইসলামী পণ্ডিতদের) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সকলকে, বিশেষ করে শিশুদের, জঙ্গিবাদে না জড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, “জঙ্গিবাদ ইসলামকে মর্যাদা দেওয়ার পরিবর্তে অসম্মান করছে।”
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফরমে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধনের সময় শেখ হাসিনা এ আহবান জানান। তিনি বলেন, “এগুলো পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করছে।” শিশু ও যুবকরা জঙ্গিদের লক্ষ্যবস্তু হওয়ায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক ও শিক্ষকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইসলামের প্রকৃত অর্থ উপলব্ধির মাধ্যমে আমরা অপশিক্ষা, মতভেদ, দ্বন্দ্ব, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুছে দিয়ে, আমাদের সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারি।” শেখ হাসিনা বলেন, “মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মাধ্যমে মানুষ ইসলামী মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করবে। এগুলো, ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধের পাশাপাশি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নারীর ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করতে ব্যাপক অবদান রাখবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “ইসলামের নামে কেউ যাতে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে না পারে, সেজন্য সরকার মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আদর্শ মসজিদ ইসলাম সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি করবে-যা শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের ধর্ম। এটি সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও নারীদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করতে সাহায্য করবে। মানুষের মধ্যে ইসলামিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির প্রকৃত জ্ঞান প্রদান করবে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ মসজিদের খতিব ও ইমামদের সম্মান করে। তাই আপনারা নিশ্চিত করুন কেউ যেন আমাদের ধর্ম ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে না পারে। আপনারা আপনাদের প্রতিদিনের খুতবা ও জুমার খুতবার মাধ্যমে মাদকাসক্তি, বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, খাদ্যে ভেজাল এবং দুর্নীতির মতো সামাজিক ব্যাধিতে জড়িত হওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য মানুষকে শিক্ষিত করতে পারেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “ধর্মকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। আমাদের লক্ষ্য, ধর্মকে ব্যবহার করে নির্যাতন ও নিপীড়নের অবসান ঘটানো।” ইসলাম সব ধর্মের মানুষের জন্য অবাধে ধর্ম পালন নিশ্চিত করে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক পরিচয় ও মতামত নির্বিশেষে প্রতিটি ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে আমরা একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে পারি।”
Source link