প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আলোচনার পর অবসরের ঘোষণা প্রত্যাহার করে নিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রধানমন্ত্রী তাকে অবসর ভেঙে খেলায় ফেরার ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন বলেও জানান অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। আপাতত দেড় মাস থাকবেন বিশ্রামে। বিরতি থেকে ফিরে এশিয়া কাপে আবার মাঠে ফিরবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
চট্টগ্রামে গত পরশু হুট করেই সংবাদ সম্মেলন ডেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম। প্রধানমন্ত্রীর ডাক পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে গতকাল ঢাকায় ফিরে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে যান তামিম। সাথে ছিলেন তার স্ত্রী আয়েশা ইকবাল। পরে সেখানে ডেকে নেয়া হয় বিসিবি সভাপতিকে। সেখান থেকে বের হয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। গতকাল থেকে বেরিয়ে সিদ্ধান্ত বদলের কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেন তামিম। তামিম বলেন, ‘আজকে (গতকাল) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী আমাকে উনার বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রায় তিন ঘণ্টা উনার সাথে আমরা আলোচনা করেছি। উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন খেলায় ফিরে আসতে। আমি আমার অবসর এই মুহূর্তে উঠিয়ে নিচ্ছি। কারণ, আমি সবাইকে ‘না’ বলতে পারি; কিন্তু দেশের যে সবচেয়ে বড় ব্যক্তি, তাকে ‘না’ বলা আমার পক্ষে অসম্ভব।’
‘পাপন ভাই, মাশরাফি ভাই ছিলেন বিগ বিগ ফ্যাক্টর। মাশরাফি ভাই আমাকে ডেকে এনেছেন, পাপন ভাই সাথে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে এক-দেড় মাসের একটা ছুটিও দিয়েছেন। আমার যা চিকিৎসা আছে বা অন্য কোনো কিছু, মানসিকভাবে যদি আমি ফ্রি হতে পারি, তার পর যা করা দরকার ও তারপরে যে খেলাগুলো আছে, আমি ইনশা আল্লাহ খেলব।’
আসন্ন এশিয়া কাপে অধিনায়ক হিসেবে ফিরবেন কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত এখনো নেননি। বলেন, বিরতি থেকে ফেরার পর এই সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
চট্টগ্রামের একটি হোটেলে গত পরশু নাটকীয়ভাবে অবসরের ঘোষণার পর তামিমের সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না বিসিবি কর্তারা। বিসিবি পরিচালকদের সাথে সভার পর মাঝরাতে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি সভাপতি জানান, কোনোভাবেই তারা তামিমের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাচ্ছেন না। বোর্ড প্রধানের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে না পেরে প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ করেন সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফির সাথে। পরে মাশরাফিই তামিম ও তার স্ত্রীকে নিয়ে যান গণভবনে।
গণভবন থেকে তামিম যখন বেরিয়ে কথাগুলো বলছিলেন, তখন সেখানে জড়ো হওয়া সমর্থেকরা স্লোগান দিচ্ছিলেন তার নামে। এরপর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবি সভাপতি। পাপন বলেন, ‘বিশ্বাস ছিল আলোচনায় বসলেই সব সমাধান হয়ে যাবে। আমার একটা ধারণা হয়েছিল ওর (তামিমের) সংবাদ সম্মেলন দেখে, হয়তো আবেগ থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে আমরা সবাই ওর সাথে বসেছিলাম। ও আপনাদের সামনেই বলে গেল, সে যে অবসরের চিঠিটা দিয়েছে- সেটি প্রত্যাহার করেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘যেহেতু সে শারীরিক ও মানসিকভাবে এখনো ফিট নয়, সেই জন্য দেড় মাস সময় নিয়েছে। এই দেড় মাসে সে পুনর্বাসন করে আশা করি আমাদের ক্রিকেটে ফিরে আসবে।’
অবসর ভেঙে ফেরার পর তামিমকে তারা অধিনায়ক হিসেবে চান, এটিও স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন বিসিবি সভাপতি।
‘এটি অবশ্যই সবার জন্যই স্বস্তির। আমাদের অধিনায়ক যদি না থাকে, তাহলে খেলব কিভাবে!’
এশিয়া কাপ শুরু হবে আগামী ৩১ আগস্ট। দেড় মাসের ছুটিতে থাকা মানে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের পরের দুই ম্যাচ খেলবেন না তামিম। এরই মধ্যে তামিমের জায়গায় লিটন দাসকে অধিনায়ক করার ঘোষণা দিয়েছে বিসিবি। তামিমের বদলে দলে ডাকা হয়েছে রনি তালুকদারকেও।
Source link