জার্মানিতে স্থায়ী হতে ছয় মাসে ৪৯ হাজার আবেদন
জার্মানিতে স্থায়ী হতে ছয় মাসে ৪৯ হাজার আবেদন

স্বল্পমেয়াদে বসবাসের অনুমতি থাকা অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পাওয়ার বিধান যুক্ত করে আইন কিছুটা শিথিল করেছে জার্মানি৷ সরকারের এমন ঘোষণার ছয় মাসের মধ্যে অন্তত ৪৯ হাজার অভিবাসী অপরচুনিটি রেসিডেন্টস অ্যাক্টের আওতায় আবেদন জমা দিয়েছেন৷

২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই সুযোগটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জার্মানি৷ যা জার্মান ভাষায় চান্সেন-আফেন্টহাল্টসরেখট নামে পরিচিত৷ এই সুযোগে অন্তত ৪৯ হাজার অভিবাসী নতুন করে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি চেয়ে আবেদন জমা দিয়েছেন৷

ইন্টিগ্রেশন মিডিয়া সার্ভিসের এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে  এসেছে৷ এখন পর্যন্ত যাচাই-বাছাই করে ১৭ হাজার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে৷ বাতিল করা হয়েছে দুই হাজার ১০০টি৷

জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, আরও অভিবাসন সংক্রান্ত আইন সংস্কারের ফলে চাপের মুখে পড়েছে কর্তৃপক্ষ৷ যার কারণে এসব আবেদন নিষ্পত্তি করতে সময় লাগছে অনেক৷

এই আইনের অধীনে অন্তত ৯৮ হাজার মানুষ স্থায়ী বসবাসের অনুমতি চেয়ে আবদেন জমা দেবে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ৷ তবে সব দিক বিশ্লেষণ করে ৩৩ হাজার মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাবেন বলেও আশা করা হচ্ছে৷

নতুন সম্ভাবনা

ডুলডুং বা অস্থায়ীভাবে কিছুদিন জার্মানিতে অবস্থানের অনুমতি পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবরের আগে এসেছেন, তারা এই আইনের আওতায় দেড় বছরের ভিসা পাওয়ার যোগ্য৷ এই দেড় বছর তারা আইনি মর্যাদার পাওয়ার পাশাপাশি শ্রমবাজারেও যুক্ত হতে পারবেন৷

দেড় বছর পর আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী, জার্মান ভাষায় প্রাথমিক জ্ঞান আছে এবং পরিচয়ের প্রমাণ তুলে ধরতে পারবেন যারা, তাদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতির চেয়ে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে৷ তবে, আবেদনটি ১৮ মাস শেষ হবার আগেই করতে হবে৷

যারা জার্মানিতে অপরাধ করে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের পরিচয় সম্পর্কে দুই বা ততোধিকবার মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন, তাদেরকে কোনোভাবেই বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে না৷

এই আইনের কারণে কিছু অভিবাসী এবং উদ্বাস্তুদের বসবাসের সুযোগ সীমিত হয়ে আসবে বলে শঙ্কা করছে অভিবাসী অধিকার সংস্থাগুলো৷ তাই আইনের এ দিকটা নিয়ে সমালোচনা করেছেন তারা৷ তাদের দাবি, অনেক ছোটোখাট অপরাধ করে যারা দোষী প্রমাণিত হয়েছেন, কিংবা যাদের কাছে নিজের পরিচয় প্রমাণে প্রয়োজনীয় নথি নেই, তারা এই আইনি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন৷

এই আইনের অধীনে বসবাসের অনুমতি তিন বছর বাড়ানো উচিত বলেও দাবি করেছে অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো৷তারা বলছে, এটি হলে মানুষ জার্মানিতে তাদের জীবন এবং ভবিষ্যত নির্ধারণে যথেষ্ট সময় পাবেন৷

আঞ্চলিক পার্থক্য

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালের শেষে এসে জার্মানিতে ডুলডুং স্ট্যাটাস নিয়ে অবস্থান করছিলেন দুই লাখ ৪৮ হাজার মানুষ৷ এদের মধ্যে এক লাখ ৩৭ হাজার মানুষ গত পাঁচ বছর ধরে জার্মানিতে বসবাস করছেন৷ ফলে এদের মধ্যে যারা যোগ্য, তারাই নতুন করে আবেদন জমা দিয়েছেন৷

সমীক্ষায় দেখা গেছে, বসবাসের অনুমতি চেয়ে করা আবেদনকারীর সংখ্যা রাজ্য অনুযায়ী ভিন্ন৷ বার্লিন ও বাভারিয়াতে যোগ্যদের মধ্যে প্রায় ৫৮ শতাংশ আবেদন জমা দিয়েছেন৷ কিন্তু জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থ রাইন-ভেস্টফালিয়ায় আবেদনের সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে, আবেদন প্রত্যাখানের হারও অনেকটাই কম৷

বিষয়:জার্মানিঅভিবাসীআবেদন৪৯ হাজার আবেদন


Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *