ঢাকায় মঞ্জুশ্রী | The Business Standard
ঢাকায় মঞ্জুশ্রী | The Business Standard

‘মঞ্জুশ্রীকে দেখে আমার মনে হতো, সারা পৃথিবীর সকল অন্ধকার তিনি জড়িয়ে আছেন। এত চুপচাপ মানুষ আমি আগে দেখিনি। সব সময়ই গম্ভীর। একবার রিকশায় যেতে যেতে তাকে সাহস করে বললাম, তোমাকে একটা কথা বলি যদি মনে কিছু না করো। মঞ্জুশ্রী বলল, বলো। বললাম, তোমাকে দেখলেই মনে হয় তুমি বুঝি আত্মহত্যা করতে চাও। আত্মহত্যা করো না। জীবন মূল্যবান।’

রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পরের বছর এই বাংলার আলো-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা কবি জীবনানন্দ দাশ—যাঁর ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যগ্রন্থটি মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। তাঁর একমাত্র কন্যা মঞ্জুশ্রী দাশ যে ঢাকায় এসেছিলেন, সেই তথ্যটি আমাদের জানা ছিল। কিন্তু তার সঠিক তারিখটি জানা যায় না বা এরপরেও তিনি কতবার এসেছেন, সে বিষয়েও ভিন্ন ভিন্ন তথ্য মিলছে। কেননা এইসব তথ্য এখন প্রত্যক্ষদর্শীদের স্মৃতিতে ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’।

ওই সব সফরে ঢাকায় এসে তিনি কোথায় কোথায় ছিলেন; কার বা কাদের বাড়িতে কিংবা কোন হোটেলে উঠেছিলেন; কাদের আমন্ত্রণে বা কোন অনুষ্ঠানে এসেছিলেন; বাংলাদেশ সফরের ওই দিনগুলোয় তিনি তাঁর জন্মস্থান ও পৈত্রিক বাড়ি বরিশাল শহরে গিয়েছিলেন কি না—এসব প্রশ্নেরও সুস্পষ্ট উত্তর নেই। তার প্রধান কারণ মঞ্জুশ্রীকে ঢাকায় যাঁরা দেখেছেন বা যাঁদের সঙ্গে তাঁর দেখা-সাক্ষাৎ ও আলাপ হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই বেঁচে নেই। ফলে মঞ্জুশ্রীর বাংলাদেশ সফরের ইতিবৃত্ত খুঁজে বেরা করা বেশ কঠিন। 

মঞ্জুশ্রীর ঢাকা সফরের প্রথম ক্লুটা দেন লেখক ও গবেষক ড. ইসরাইল খান। ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি ফেসবুকে তিনি বাংলাদেশ বেতারের মুখপত্র ‘বেতার বাংলা’র মার্চ ১৯৭২ সংখ্যায় প্রকাশিত মঞ্জুশ্রীর ছবিসংবলিত পৃষ্ঠাটি তুলে দেন, যেখানে মঞ্জুশ্রীর ছবির নিচে লেখা: ‘মঞ্জুশ্রী দাস। কবি জীবনানন্দ দাসের কন্যা (দাশ বানানটি ভুল)। ইনি সম্প্রতি বাংলাদেশ বেতার থেকে প্রচারিত কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।’

ইসরাইল খানের সঙ্গে আমার কথা হয় ২০২২ সালের অক্টোবরে। বলেন, জীবনানন্দকন্যা ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ অথবা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় এসেছিলেন বলে মনে হয় এবং ওই সময়ে তিনি বাংলাদেশ বেতারে কবিতা পড়েছিলেন। ওই সময় ‘বেতার বাংলা’র সাথে সম্পর্ক ছিল কবি নির্মলেন্দু গুণ, আসাদ চৌধুরী, আল মুজাহিদী, মুহাম্মদ নূরুল হুদা, অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন প্রমুখের। তাঁদের মধ্যে কেউ না কেউ মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে কথা বলে থাকতে পারেন বলে ইসরাইল খান মনে করেন।   

বেতার বাংলার ৪৯ নম্বর পৃষ্ঠায় মঞ্জুশ্রীর ছবি ছাপা হয়। ওই একই পৃষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধের সময়কার শব্দসৈনিক দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায় এবং সাহিত্যিক মৈত্রেয়ী দেবী এবং কে জি মোস্তফার ছবিও ছাপা হয়—যাঁরা বেতারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

মঞ্জুশ্রীর ঢাকায় আসার বিষয়ে বেতার বাংলার এই পত্রিকাটিই প্রধান উৎস নির্দেশ। তবে তিনি ঠিক কবে ঢাকায় এসেছিলেন এবং কোন দিন বেতারে কবিতা পড়েছিলেন, সেটি এখানে উল্লেখ নেই। ফলে বিষয়টি জানতে আমরা ওই সময়ে বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তা কবি জাহিদুল হকের শরণাপন্ন হই—যিনি একই সঙ্গে একজন কবি এবং অনেকগুলো বিখ্যাত বাংলা গানের রচয়িতা। 

জাহিদুল হক এখন অবসরে। বয়স ৭৫ পেরোল। থাকেন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পূর্ব প্রান্ত বনশ্রী এলাকার ‘এফ’ ব্লকে। এখান থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবন (বিটিভি) হাঁটাপথ। এই টেলিভিশনে জাহিদুল হক শিল্প সাহিত্য বিষয় একটি অনুষ্ঠানের সঞ্চালন করছেন প্রায় ২৬ বছর ধরে। 

জাহিদুল হককে যখন মঞ্জুশ্রীর বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রথমবার ফোন দিই—তিনি খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। কারণ, অর্ধশতাব্দী আগের ঘটনা, যা এখন ধূসর হতে থাকা স্মৃতি বৈ কিছু নয়। জাহিদুল হক স্মৃতি ঘেঁটে খণ্ড খণ্ড কিছু তথ্য আমাদের জানান। কিছু ব্যক্তিগত ঘটনারও উল্লেখ করেন। কিন্তু তিনিও সুনির্দিষ্ট করে দিনক্ষণ বলতে পারেননি।

মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার আলাপ শেষে জাহিদুল হকের বাসায় যাই ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায়। বাসার তখন গ্যাস-সংকট। আমাদের জন্য চা বানাতেও বেশ বেগ পেতে হয়। আমাদের আলাপচারিতার পুরো সময়টুকুতে সেখানে নীরব শ্রোতা হয়েছিলেন কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ। তিনিও বনশ্রী এলাকায় থাকেন। 

জাহিদুল হক আফসোস করে বললেন, মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে তাঁর ঢাকায় একাধিকবার দেখা হলেও এসব ঘটনাপ্রবাহ তিনি কেন যে ডায়েরিতে লিখে রাখলেন না বা মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে কেন যে একটা ছবি তুললেন না—তা ভেবে এখন নিজের ওপর রাগ হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আবার ভাবি, আমার সঙ্গে নজরুলেরও তো কোনো ছবি নেই। অথচ বেতারে চাকরির কারণে অনেকবার ধানমন্ডিতে কাজী নজরুলের বাসায় গিয়েছি। কী বলব, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেও তো আমার কোনো ছবি নেই। অথচ থাকতে পারত।’ 

এই আফসোস নিয়েই কবি জাহিদুল হক আমাদের জানাচ্ছেন যে মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা বা পরিচয়ের তিনটি সম্ভাব্য স্থান হতে পারে। প্রথমত বাংলাদেশের প্রথম নারী গ্রন্থাগারিক নার্গিস জাফরের (কবি সিকানদার আবু জাফরের স্ত্রী) বাসা। জাহিদুল হক বলছেন, নার্গিস জাফর যেহেতু কলকাতার মেয়ে এবং একসময় হিন্দুধর্মের অনুসারী ছিলেন, সে কারণে কলকাতার শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনের অনেকের সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ ছিল এবং এই যোগাযোগের সূত্রে যাঁরা ঢাকায় আসতেন, তাঁদের অনেকেই নার্গিসের বাসায় উঠতেন। সে কারণে মঞ্জুশ্রীও যতবার ঢাকায় এসেছেন, তার কোনো না কোনো সময়ে হয়তো এই বাসায় ছিলেন বলে জাহিদুল হকের ধারণা। নার্গিস জাফর মারা গেছেন ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর।

জাহিদুল হক দুই নম্বর সম্ভাবনার কথা বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সন্জীদা খাতুনের (জন্ম ৪ এপ্রিল ১৯৩৩) বাসা। সন্জীদা খাতুন এখন বয়সের ভারে ন্যূব্জ। অনেক কিছুই স্পষ্ট মনে নেই। তাঁর সঙ্গে কথা হয় ২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি। তিনি ঠিক মনে করতে পারছেন না মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল কি না। আমরা ধারণা করতে পারি, মঞ্জুশ্রীর মতো একজন মানুষ, যিনি জীবনানন্দ দাশের কন্যা—তাঁর সঙ্গে দেখা হলে সন্জীদা খাতুনের মনে থাকত। ফলে মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে জাহিদুল হকের প্রথম সাক্ষাৎস্থল সনজীদা খাতুনের বাসা—এই সম্ভাবনাটি বাদ দিতে হচ্ছে।

জাহিদুল হক তৃতীয় সম্ভাব্য স্থানের কথা বলছেন বাংলা একাডেমির বইমেলা। 

বেতার বাংলার মার্চ ১৯৭২ সংখ্যায় বলা হয়েছে, মঞ্জুশ্রী সম্প্রতি ঢাকায় এসেছিলেন। ঢাকায় অমর একুশে বইমেলা হয় ফেব্রুয়ারি মাসে। সুতরাং এমনও হতে পারত যে মঞ্জুশ্রী ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ঢাকায় এসেছিলেন এবং বইমেলা প্রাঙ্গণে, অর্থাৎ বাংলা একাডেমিতে জাহিদুল হকের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। কিন্তু ১৯৭২ সালে, অর্থাৎ দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে যে বইমেলা হয়নি, সেটি জানাচ্ছেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান (১৯৪০-২০২১)। তিনি লিখেছেন, ‘১৯৭২ সালে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলা একাডেমির একুশের অনুষ্ঠানে কোনো বইমেলা হয়নি। তবে বাংলা একাডেমির দেয়ালের বাইরে স্ট্যান্ডার্ড পাবলিশার্সের রুহুল আমিন নিজামী তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রগতি প্রকাশনীর কিছু বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেন। তাঁর দেখাদেখি মুক্তধারা প্রকাশনীর চিত্তরঞ্জন সাহা এবং বর্ণমিছিলের তাজুল ইসলামও ওভাবেই তাঁদের বই নিয়ে বসে যান।’

অতএব এটি ধরে নেওয়াই সঙ্গত যে জাহিদুল হকের সঙ্গে মঞ্জুশ্রীর প্রথম সাক্ষাৎ সন্জীদা খাতুনের বাসায় নয়, বইমেলায়ও নয়। হতে পারে সেটি নার্গিস জাফরের বাসায় কিংবা অন্য কোথাও—যেটি এখন জাহিদুল হক মনে করতে পারছেন না। তবে ১৯৭২ সালের পরে মঞ্জুশ্রী যখন ঢাকায় এসেছেন, তখন হয়তো বইমেলায়ও তাঁর সঙ্গে জাহিদুল হকের দেখা হয়ে থাকতে পারে। তিনি এ বিষয়ে মোটামুটি নিশ্চিত, যেহেতু তিনি তখন বেতারের প্রোগ্রাম অর্গানাইজার এবং সাহিত্য আসরটিও সমন্বয় করতেন, ফলে মঞ্জুশ্রীর কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানটি তাঁর তত্ত্বাবধানেই হয়েছিল। তিনি যতটুকু মনে করতে পারেন, মঞ্জুশ্রী নিজের কবিতা পড়েছিলেন, বাবা জীবনানন্দ দাশের নয়। 

মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে জাহিদুল হকের বয়সের পার্থক্য প্রায় ১৮ বছর। কিন্তু তারপরও তাঁদের মধ্যে একটা সখ্য তৈরি হয়। তারা পরস্পরকে ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করতেন। ঢাকার দিনগুলোয় মঞ্জুশ্রী বাংলাদেশ বেতারে একাধিকবার গিয়েছেন এবং দীর্ঘ সময় চুপচাপ চেয়ারে বসে থাকতেন। কখনো দুপুরের খাবারের সময় হলে জাহিদুল হক তাঁর জন্য বেতারের ক্যান্টিন থেকে পরোটা, সবজি ও মাংস আনাতেন। জাহিদুল হক তাঁর জন্য ‘ভাত আনাব কি না’ জানতে চাইলে তিনি ভাতের বদলে পরোটাকে অগ্রাধিকার দিতেন। 

জাহিদুল হক মনে করতে পারেন, ঢাকার বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবের রেস্টুরেন্টেও তিনি মঞ্জুশ্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন। যেহেতু জাহিদুল হক তখন অফিসার্স ক্লাবের সদস্য ছিলেন না, তাই একজন পরিচিত সদস্যের মারফত ক্লাবে যান। আরেক দিন তিনি মঞ্জুশ্রীকে দুপুরের খাবার খাওয়ান ঢাকার শাহবাগে, বাংলাদেশ বেতারের কাছেই সাকুরা বার ও রেস্টুরেন্টে। 

‘মঞ্জুশ্রী কিছুটা পান করেছিলেন।’ 

জাহিদুল হকের ভাষায়: ‘মঞ্জুশ্রীকে দেখে আমার মনে হতো, সারা পৃথিবীর সকল অন্ধকার তিনি জড়িয়ে আছেন। এত চুপচাপ মানুষ আমি আগে দেখিনি। সব সময়ই গম্ভীর। একবার রিকশায় যেতে যেতে তাকে সাহস করে বললাম, তোমাকে একটা কথা বলি যদি মনে কিছু না করো। মঞ্জুশ্রী বলল, বলো। বললাম, তোমাকে দেখলেই মনে হয় তুমি বুঝি আত্মহত্যা করতে চাও। আত্মহত্যা কোরো না। জীবন মূল্যবান।’ 

আমরা জানতে পারি, ঢাকা সফরের দিনগুলোয় যাঁদের সঙ্গে মঞ্জুশ্রীর দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে, বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণ তাঁদের অন্যতম। নির্মলেন্দু গুণের সঙ্গে আমাদের কথা হয় ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর দুপুরে। দিনটি ছিল বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এদিন রাজধানী ঢাকায় সরকারবিরোধী দল বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পুরো ঢাকা শহরে নেমে আসে হরতালের আবহ। সেদিনের সমাবেশে ঢাকায় বড় ধরনের সংঘাতেরও আশঙ্কা করা হচ্ছিল। আবার এমনি একটি দিনে তৃতীয় ওয়ানডেতে সফররত ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটিতে জয় পেয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে করুণভাবে হেরে যায়। এর ঠিক আগের রাতেই বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে অন্যতম ফেভারিট ব্রাজিল হেরে যায় কোস্টারিকার সাথে। আর্জেন্টিনাও মরে মরে বেঁচে যায় নেদারল্যান্ডসের সাথে। এ রকম একটি দিনে মঞ্জুশ্রীর ঢাকা সফর নিয়ে কথা হয় কবি নির্মলেন্দু গুণের সঙ্গে। 

গুণ থাকেন ঢাকা শহরের পশ্চিম প্রান্তে বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে কামরাঙ্গীরচরে। আজকাল ঢাকায় আসেন খুব কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে বের হন না। 

গুণের সঙ্গে প্রায় ৫০ বছর আগের ওই ঘটনা নিয়ে কথা হয়, তখন তার বয়স ৭৭ বছর। অর্থাৎ মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে যখন তার সাক্ষাৎ বা যে বছর মঞ্জুশ্রী ঢাকায় আসেন, তখন গুণের বয়স ২৭। সদ্য স্বাধীন দেশের টগবগে তরুণ। ফলে তিনি মঞ্জুশ্রীর ঢাকায় আগমনের সন-তারিখ মনে করতে না পারলেও ঘটনাগুলো মনে করতে পারেন। 

নির্মলেন্দু গুণ জানান, মঞ্জুশ্রী ঢাকায় এসেছিলেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। সরকার বা কোনো সংগঠনের আমন্ত্রণে নয়। উঠেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অজয় রায়ের বাসায়। অজয় রায় (জন্ম ০১ মার্চ ১৯৩৫-মৃত্যু ৯ ডিসেম্বর ২০১৯) ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক। বিজ্ঞানবিষয়ক লেখালেখির জন্য তাঁর ছেলে অভিজিৎ রায়ের সুনাম ছিল এবং অভিজিৎ রায় ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন। ধারণা করা হয়, স্রষ্টা বা ঈশ্বর ও ধর্মবিষয়ক লেখালেখির কারণেই তাঁকে খুন হতে হয়েছে। অভিজিৎ রায়ের বাবা অজয় রায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সৈনিক ছিলেন ওই বছরের সেপ্টেম্বরে জন্ম হয় অভিজিতের।

নির্মলেন্দু গুণ মনে করতে পারেননি যে মঞ্জুশ্রী ঢাকায় ঠিক কত দিন ছিলেন। তবে তিনি মঞ্জুশ্রীকে ঢাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখিয়েছেন এবং পুরান ঢাকার বাংলাবাজার, যেখানে একসময় বইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস ছিল (এখনো আছে), সেখানে খান ব্রাদার্সে মঞ্জুশ্রীকে নিয়ে যান। খান ব্রাদার্স এর আগেই ‘জীবনানন্দের কাব্যসম্ভার’ নামে একটি সংকলন প্রকাশ করে—যেটির সম্পাদনা করেন রণেশ দাশগুপ্ত।

নির্মলেন্দু গুণ জানাচ্ছেন, এই বইয়ের রয়্যালটি হিসেবে খান ব্রাদার্স তখন মঞ্জুশ্রীকে কিছু টাকা দিয়েছিল এবং ওই টাকা দিয়ে তিনি বাবার (জীবনানন্দ দাশ) নামে একটি পুরস্কার চালু করেন। প্রথম বছর ওই পুরস্কারটি দেওয়া হয় বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী কবি আল মাহমুদকে (জন্ম ১১ জুলাই ১৯৩৬-মৃত্যু ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। এরপরে আর ওই পুরস্কারটি দেওয়া হয়নি। 

অতএব এই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি যাচাইয়ের জন্য আমাদের প্রয়োজন হবে খান ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী কে এম ফিরোজ খানকে। ফিরোজ খানের সঙ্গে আমাদের কথা হয় ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি সকালে। তাঁরও বয়স হয়েছে। ফলে ৫০-৫১ বছর আগের ঘটনাবলি তার মনে ভাসা ভাসা। 

ফিরোজ খান তখন কলেজের ছাত্র। খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা। মঞ্জুশ্রীকে নিয়ে যখন নির্মলেন্দু গুণ বাংলাবাজারে খান ব্রাদার্সের অফিসে যান, তখন ব্যবসা দেখভাল করতেন ফিরোজ খানের বাবা মোসলেম খান। 

ফিরোজ খান জানান, ‘জীবনানন্দের কাব্যসম্ভার’ তাঁরা প্রকাশ করেন ১৯৭০ সালের মার্চ-এপ্রিলে। অর্থাৎ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগের বছর। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছরের শেষ অথবা ১৯৭৩ সালের শুরুতে যখন মঞ্জুশ্রী ঢাকায় আসেন, তখন নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে বাংলাবাজারে নিয়ে যান এবং ‘জীবনানন্দের কাব্যসম্ভার’ বইয়ের রয়্যালটি বাবাদ মঞ্জুশ্রীকে কিছু টাকা দেন। কিন্তু সেই টাকার অঙ্কটা এখন আর মনে নেই। টাকাটা মঞ্জুশ্রীর হাতে দিয়েছিলেন মোসলেম খান। মধ্যস্থতা করেছিল জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র। ওই টাকা দিয়ে মঞ্জুশ্রী তাঁর বাবা জীবনানন্দ দাশের নামে যে পুরস্কারটি চালু করেন, সেটি আল মাহমুদ ছাড়া আর কাউকে দেওয়া হয়নি বলে নির্মলেন্দু গুণ জানালেও ফিরোজ খান বলছেন, বাংলা সাহিত্যের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ কবি শামসুর রাহমানকেও পুরস্কারটি দেওয়া হয়েছিল। বাংলাপিডিয়ার তথ্যও বলছে, ১৯৭৩ সালে শামসুর রাহমান ‘জীবনানন্দ পুরস্কার’ পেয়েছেন। আর লিটল ম্যাগাজিন ‘চাঁড়ুলিয়া’র ‘আল মাহমুদ সংখ্যা’য় বলা হয়েছে, ১৯৭৪ সালে আল মাহমুদ পেয়েছেন জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কার।৫ 

মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে যে আল মাহমুদের সাক্ষাৎ হয়েছে, সেটির প্রমাণ মেলে বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে—যেখানে মাহমুদ জানাচ্ছেন, মঞ্জুশ্রী দাশ ঢাকায় তাঁর বাসায় এসেছিলেন। কলকাতায়ও কয়েকবার দেখা হয়েছে। আল মাহমুদ তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাঁর বাবা (জীবনানন্দ দাশ) কি আত্মহত্যা করেছিলেন? মঞ্জুশ্রী বলেছিলেন, ‘না; অসতর্ক মুহূর্তে ট্রামচাপা পড়েছিলেন।’ আল মাহমুদ বলেন, ‘আমার সঙ্গে আলাপে মায়ের নাম সে করেনি কখনো। বাবাকে সে খুব ভালোবাসত, এটা বলত। কিন্তু জীবনানন্দ দাশ সম্পর্কে আমরা যা জানতে চাইতাম, সে ব্যাপারে সে কিছুই জানত না। মেয়ের কাছেও জীবনানন্দ অজানা কৌতূহলের বিষয় হয়েছিলেন বলে আমার ধারণা। রহস্যময়। মেয়ে তাঁর সম্পর্কে বেশি জানত না। তাঁর জীবনাদর্শ বা লেখার নেপথ্যের ঘটনাগুলো মঞ্জুশ্রীর কাছে জানতে চাইলে সে কিছুই বলতে পারেনি।’৬

সুতরাং বাংলাপিডিয়া ও চাঁড়ুলিয়ার তথ্য অনুযায়ী, জীবনানন্দ দাশের নামে এই পুরস্কারটি বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই কবি শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদ পেয়েছিলেন পরপর দুই বছরে। এরপরে আর মঞ্জুশ্রী এই পুরস্কারটি বহাল রাখেননি বা রাখতে পারেননি তার প্রধান কারণ আর্থিক সংকট। সারা জীবন যে মানুষটা সংসারে অভাব-অনটন দেখেছেন, তিনি তাঁর বাবার কাব্যগ্রন্থের রয়্যালটি থেকে প্রাপ্ত অর্থ যে বাবার নামে পুরস্কারের পেছনেই খরচ করে ফেললেন—এটি বোধ হয় মঞ্জুশ্রী বা জীবনানন্দের কন্যার পক্ষেই সম্ভব। 

ফিরোজ খান মনে করতে পারেন, যেহেতু সংসারে টানাটানি, সুতরাং বইয়ের রয়্যালটি বাবদ পাওয়া টাকাটা মঞ্জুশ্রী তাঁর মাকে (লাবণ্য দাশ) দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি এটা না করে বাবার নামে পুরস্কার চালু করায় বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন রণেশ দাশগুপ্ত। 

ফিরোজ খান যতটুকু মনে করতে পারেন, মঞ্জুশ্রীকে তিনি দুবার দেখেছেন। তবে সেভাবে কথাবার্তা হয়নি। 

মঞ্জুশ্রীকে খান ব্রাদার্সে নিয়ে গিয়েছিলেন যে নির্মলেন্দু গুণ, মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে পরে তাঁরও আর যোগাযোগ হয়নি। নির্মলেন্দু গুণ মনে করতে পারেন, মঞ্জুশ্রীকে তিনি প্রথম দেখেন কলকাতায় ১৯৭১ সালে; যখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলছিল। 

এই ঘটনাটি আমাকে বলেন বাংলাদেশ বেতারের সাবেক কর্মকর্তা এবং প্রখ্যাত আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম। নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে (আশরাফুল আলম) কলকাতার একটি পত্রিকার অফিসে নিয়ে যান। একটা বড় টেবিল। বেশ কয়েকটি চেয়ার। তখন খুব ধীর পায়ে, বিষণ্ন বদনে একজন নারী প্রবেশ করলেন। চুপচাপ একটি চেয়ারে বসলেন। তখন ওখানে থাকা একজন (আশরাফুল আলম তার নাম মনে করতে পারেননি) মঞ্জুশ্রীকে দেখিয়ে বললেন, ওনাকে চেনেন? জীবনানন্দ দাশের মেয়ে। ‘মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়নি। এত চুপচাপ, এত বিষণ্ন, এত ধীর, স্বাভাবিকের চেয়ে হাঁটার গতি বেশ কম। মনে হলো, সারা পৃথিবীর বিষণ্নতা তাঁর চোখে-মুখে।’ 

কবি জাহিদুল হক মোটামুটি নিশ্চিত, মঞ্জুশ্রী অন্তত তিনবার ঢাকায় এসেছেন। প্রথমবার ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে। এরপর ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে নিহত হওয়ার পরে ১৯৭৭-৭৮ সালে এবং আশির দশকের শুরুতে। সেটা সম্ভবত ১৯৮১ বা ১৯৮৩ সালে। জাহিদুল হক মনে করতে পারেন, তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থটি মঞ্জুশ্রীকে দিয়েছিলেন এবং তাঁর কবিতায় জীবনানন্দের কোনো ছাপ আছে কি না জানতে চাইলেন। মঞ্জুশ্রী কয়েকটি কবিতা পড়ে জাহিদুল হককে বলেছিলেন, ‘না। বাবার কোনো ছাপ নেই। তোমার কবিতা তো বেশ ভালো।’ এই ঘটনাটি নিশ্চয়ই জাহিদুল হকের প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পরে। সুতরাং এটি হতে পারে ১৯০১-৮৩ সালের মধ্যে কোনো একসময়ে। এরপরে মঞ্জুশ্রী আর কখনো ঢাকায় এসেছেন—এমন তথ্য পাওয়া যায় না। 

আশ্চর্যের বিষয় হলো, তিনি একাধিকবার ঢাকায় এলেও বরিশালে তাঁর নিজের জন্মস্থান এবং পিতৃপুরুষের ভিটায় যাননি। আমরা নানাভাবে খোঁজ নিয়েছি। বরিশাল শহরে শিল্পসাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত প্রবীণ মানুষদের সঙ্গেও কথা বলেছি। কেউই এটা নিশ্চত করে বলতে পারেননি যে মঞ্জুশ্রী বরিশালে গিয়েছিলেন। অথবা হয়তো গিয়েছিলেন চুপি চুপি। কেউ হয়তো টেরও পায়নি। কারণ, তিনি বরাবরই নির্লিপ্ত, চুপচাপ—বাবার মতোই সকল লোকের মাঝে বসে নিজের মুদ্রাদোষে একা হয়ে যাওয়া মানুষ।

টীকা ও উৎস নির্দেশ:
১. বাংলাদেশের প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক, লেখক, গবেষক ও প্রাবন্ধিক ড. আনিসুজ্জামান (জন্ম ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭—মৃত্যু ১৪ মে ২০২০) তাঁর একটি লেখায় (জীবনানন্দ দাশ: একটি ব্যক্তিগত পর্যালোচনা) বলেছেন, ‘আমার এক ভারতীয় বন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে গিয়ে একবার জানতে চেয়েছিলেন, পরেরবার যখন আসবেন, তখন কী নিয়ে আসবেন তাদের জন্য? তারা বহু দ্বিধার পরে উত্তর দিয়েছিল। জামাকাপড় নয়, খাদ্যদ্রব্য নয়, রূপসী বাংলার একটি কপি। হয়তো এ বিচার নন্দনতাত্ত্বিক নয়, তবে একজন কবির পক্ষে এর চেয়ে বড় পাওয়া কী হতে পারে, আমার তা জানা নেই।’ (জীবনানন্দ দাশ জন্মশতবার্ষিক স্মারকগ্রন্থ, আবদুল মান্নান সৈয়দ ও আবুল হাসনাত সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ২৭)।

২. ফজল-এ-খোদা সম্পাদিত পাক্ষিক ‘বেতার বাংলা’ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাহিত্য পত্রিকা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের এক মাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হয় বাংলাদেশ বেতারের মুখপত্র হিসেবে পাক্ষিক অনুষ্ঠান পত্রিকা বেতার বাংলা প্রকাশ করা হবে। প্রখ্যাত গীতিকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফজল-এ-খোদার ওপর ন্যস্ত করা হয় পত্রিকার সার্বিক দায়িত্ব। বেতারের অনুষ্ঠানাদির দৈনন্দিন বিবরণীর পত্রিকা হলেও সম্পাদক ফজল-এ-খোদার সহজাত সৃজনশীলতায় বেতার বাংলা হয়ে ওঠে প্রথম শ্রেণির একটি সাহিত্য পত্রিকা। পাক্ষিক বেতার বাংলার প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা, যেটি প্রকাশিত হয় মার্চ ১৯৭২ সালের প্রথম পক্ষে, এর ৪৯ পৃষ্ঠায় ছাপা হয় মঞ্জুশ্রীর ছবি। প্রসঙ্গত, বেতার বাংলার এই সংখ্যায় লিখেছিলেন ড. কুদরৎ-ই-খুদা, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সুফিয়া কামাল, আকরম হোসেন, ডক্টর নীলিমা ইব্রাহিম, কে জি মোস্তফা, আল মুজাহিদী, গাজীউল হক, আসাদ চৌধুরী, আশরাফুল আলম প্রমুখ। 

৩. শামসুজ্জামান খান, বইমেলার ইতিহাস ও নতুন আঙ্গিকে বইমেলা, প্রথম আলো, ৩১ জানুয়ারি ২০১৪।

৪. রণেশ দাশগুপ্ত সম্পর্কে ছিলেন জীবনানন্দের জেঠতুতো ভাই। বয়সে জীবনানন্দের চেয়ে ১৩ বছরের ছোট। কলকাতায় পড়াশোনা করতেন। কিন্তু কিছু ঝামেলার কারণে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে গিয়ে ভর্তি হন। তখন থাকতেন বরিশাল শহরে জীবনানন্দের পৈতৃক বাড়ি সর্বানন্দ ভবনে। বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পেশাগত জীবনে ছিলেন সাংবাদিক। দৈনিক সংবাদে কর্মরত অবস্থায় একাধিক বই সম্পাদনা করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ‘জীবনানন্দ দাশের কাব্যসম্ভার’ নামে একটি বই সম্পাদনা করেন। এটিই বাংলাদেশে জীবনানন্দ চর্চার প্রথম উদ্যোগ। এই বইতে প্রথম জীবনানন্দের কাব্যসম্ভার এক মলাটের মধ্যে পায় বাংলাদেশের পাঠকেরা। (জাহীদ রেজা নূর, হারিয়ে যাওয়া এক বিপ্লবী, আজকের পত্রিকা, ৪ নভেম্বর ২০২১)।

৫. ‘চাঁড়ুলিয়া’, আল মাহমুদ সংখ্যা, সম্পাদক ওমর বিশ্বাস, পৃষ্ঠা ৯০।

৬. আল মাহমুদের সাক্ষাৎকার, প্রথম আলো ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।


Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *