অতিবৃষ্টিতে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর বিভিন্ন অংশে বন্যার দেখা দিয়েছে। গত তিনদিন তীব্র বন্যাতে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রদেশগুলোর বেশিরভাগ শহরের রাস্তা থেকে শুরু করে অধিকাংশ ভবনে হাঁটু সমান পানি। অতিবৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশে ভূমিধ্বস ও আকস্মিক বন্যায় স্বাভাবিক জীবন স্থবির হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িঘর ও স্থাপনা। আজ সোমবার (১০ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
পূর্বাভাসে ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, রাজস্থান, দিল্লীসহ উত্তরাঞ্চলে আরও কয়েকদিন বৃষ্টি হতে পারে।
তীব্র বন্যার ছবি ও ভিডিও অনলাইনে শেয়ার করছে হিমাচল, উত্তরাখণ্ড ও দিল্লীর মানুষেরা। সেসব ছবি ও ভিডিওতে ভীতসন্ত্রস্ত মানুষের বিশৃঙ্খল জীবনযাপনের চিত্র দেখা যায়। একইসঙ্গে যানবাহনের ভেসে যাওয়া, আবাসিক এলাকায় কাঁদাময় পানি ও নদীর তীরের স্থাপনাগুলো পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় দেখা যায়।
এদিকে, অতিবৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশে ভূমিধ্বস ও আকস্মিক বন্যায় স্বাভাবিক জীবন স্থবির হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িঘর ও স্থাপনা। মানালি, কুল্লু, কিনাউর ও চাম্বার প্রধান নদীগুলোর পানি বেড়েছে। অনেক দোকানপাট ও বিভিন্ন যান ভেসে গেছে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বাসিন্দাদের ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুকেন্দর সিং সুকু। এক ভিডিও বার্তায় হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রদেশের সমস্ত বাসিন্দার কাছে অনুরোধ করছি, আগামী ২৪ ঘণ্টা বাড়ি থেকে বের হবেন না। এ সময়ে অতিবৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনটি হেল্পলাইনে ফোন করে আপনারা সহযোগিতা চাইতে পারেন।’
হিমাচল প্রদেশের মন্ত্রী জগত সিং নেগি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনাসহ একই ধরনের দুর্ঘটনায় প্রদেশে এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত হয়েছে। ভূমিধ্বস ও আকস্মিক বন্যায় প্রাণহানির পরিমাণ তেমন বেশি নয়। বন্যায় জাতীয় মহাসড়ক, জেলা এবং সংযোগ সড়কসহ এক হাজার ৩০০টিরও বেশি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী দুদিনের জন্য উচ্চ সতর্কতায় আছি আমরা।’
ভূমিধ্বস ও আকস্মিক বন্যা হয়েছে হিমাচলের পার্শ্ববর্তী উত্তরাখণ্ডেও। এই প্রদেশের নদী পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অতিবৃষ্টি ও বন্যায় গুরগাঁও এবং দিল্লীর সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে গুরগাঁওয়ের প্রশাসন করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করানোর পরামর্শ দিয়েছে। যমুনা নীর এক লাখ কিউসেক পানি ছেড়ে দিয়েছে হরিয়ানা প্রশাসন। এর জেরে দিল্লীতে বন্যার শঙ্কা আরও বাড়ছে। ১৬টি কন্ট্রোল রুম খুলেছে দিল্লী প্রশাসন।
বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা ও যমুনা নদীর পানিরস্তর নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিল্লিতে বন্যার সম্ভাবনা নেই। এরপরেও নিচু এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে।’
এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের কাথুয়া ও সাম্বা জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। তবে, তিনদিন বন্ধ রাখার পর গতকাল রোববার থেকে অমরনাথ যাত্রা আবার শুরু হয়েছে।
রাজস্থান, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা প্রদেশের বিভিন্ন অংশেও তীব্র বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই তিন প্রদেশের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
Source link