নয়াদিল্লি: সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় আইন কমিশন নতুন করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিষয়ে পরামর্শ দেবে। মুসলিম সংগঠনগুলি এর বিরোধিতা করছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তারই মধ্যে নিউজ 18-এর ৮৮৪ জন সাংবাদিক মোট ৮,০৩৫ জন মুসলিম মহিলার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।
না, কোনও সোশ্যাল মিডিয়া পোল নয়। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে ব্যক্তিগত ভাবে এই বিষয়ে একটি প্রশ্ন করেছিল সাংবাদিকরা। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের নারীরা যোগ দিয়েছিলেন এই সমীক্ষায়। এঁদের বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বা তার বেশি। তাঁদের মধ্যে যেমন উচ্চশিক্ষিত মহিলারা ছিলেন, তেমনই ছিলেন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাহীন নারীরাও। নাম প্রকাশ করার বিষয়টি ঐচ্ছিক ছিল। তবে দেখা যায় ৯০ শতাংশ মহিলায় নাম প্রকাশ করতে ইচ্ছুক।
এই সমীক্ষা থেকে যা জানা গিয়েছে, তা কিছুটা এই রকম—
সমীক্ষার মূল ফলাফল
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সমীক্ষার ফল থেকে বোঝা যাচ্ছে মুসলিম মহিলারা মনে করছেন তাঁদের মূল চাহিদা পূরণ করতে পারবে এই নীতি। যদিও উচ্চ শিক্ষিত মুসলিম মহিলারাই (স্নাতক+) বেশি সমর্থন করছেন।
• অভিন্ন বিধির প্রতি সমর্থন:
আপামর মুসলিম মহিলাদের মধ্যে ৬৭ শতাংশই বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, দত্তক ও উত্তরাধিকারের মত ব্যক্তিগত বিষয়ে সাধারণ আইন চাইছেন। উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্য ৬৮ শতাংশের বেশি এর পক্ষে।
• বহুবিবাহের বিরোধ:
৭৬ শতাংশ (উচ্চ শিক্ষিত ৭৯ শতাংশ) মুসলিম মহিলা বহুবিবাহের বিপক্ষে। তাঁরা বলছেন, মুসলিম পুরুষের চারজন মহিলাকে বিয়ে করার অধিকার থাকা উচিত নয়।
• উত্তরাধিকারে সমান অধিকার:
সম্পত্তিতে মেয়েদের সমানাধিকার ও উত্তরাধিকার প্রশ্নে ৮২ শতাংশ অভিন্ন বিধির পক্ষে। শিক্ষিত মহিলাদের ৮৬ শতাংশ এর পক্ষে।
• পুনর্বিবাহের স্বাধীনতা:
তালাক-প্রাপ্ত দম্পতিরা কোনও শর্ত ছাড়াই পুনর্বিবাহ করতে পারবেন, এই নীতির পক্ষে ৭৪ শতাংশ মুসলিম মহিলা।
• দত্তক:
ধর্ম নির্বিশেষে দত্তক নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন ৬৫ শতাংশ মহিলা। শিক্ষিত মহিলাদের মধ্যে ৬৯ শতাংশ পক্ষে মত দিয়েছেন।
• সম্পত্তি নিয়ে সিদ্ধান্তের স্বাধীনতা:
৬৯ শতাংশ (৭৩ শতাংশ উচ্চ শিক্ষিত) মনে করছেন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকে অধিকার রয়েছে তাঁর ইচ্ছামতো সম্পত্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের।
• বিয়ের বয়স:
পুরুষ ও মহিলা নির্বিশেষে বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১ করার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন ৭৯ শতাংশ মহিলা ( ৮২ শতাংশ শিক্ষিত)।
ফলে এই সমীক্ষাই প্রমাণ করে দিতে পারে যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রতি মুসলিম মহিলাদের যথেষ্ট সমর্থন রয়েছে। এই সমীক্ষাটি ভারতের মুসলিম নারীদের প্রত্যাশা পূরণের কাজ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কে, অনেক মুসলিম মহিলা খোলাখুলিভাবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করছেন। অনেক মুসলিম পুরুষও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বাস্তবায়নের পক্ষে কথা বলছেন। তাঁরা স্বীকার করেছেন, এটি জাতীয় অখণ্ডতা এবং ঐক্যকে উন্নত করবে। প্রকৃতপক্ষে, এই সমীক্ষায় মুসলিম মহিলাদের যে মত প্রকাশ পেয়েছে তা ধর্মীয় সীমানা অতিক্রম করে দেশের সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষাকেই নির্দেশ করছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Source link